Saturday, July 25, 2009

পুরোনো কবিতা


সম্পর্ক-১

নারী বরাবরই পেতে চায় সাবলীল সঙ্গতা
সবর্দার ঝুমঝুম তাল, বাজনার রঙ্গতা।

প্রথাহীন ঐতিহ্যের প্রতিপক্ষ হয়ে
তুমিও কি নও ব্যতিক্রম(?) কাঙ্খিত সান্নিধ্যে আমার;

যাবো কেনো তবে তোমার কাছে;
এ জনমে হায়-
আঁধারের কল্লোল যখোন বুক চিড়ে হৃদপিন্ড ছুঁয়ে যায়।

গাজীপুর
মার্চ ১২, ১৯৯৭।



সম্পর্ক-২


তোমার কাছে যাবার কথা ছিলো ...
মেঠো পথের বাঁক মাড়িয়ে
গোলাপ তারার বাস নাড়িয়ে,
কথা ছিলো তোমার ঠোঁটে আঁকবো চাঁদের মুখ,
ঠিক সময়ে আমার বুকে রাখবে তোমার বুক।

নিগূঢ় কথা ভাবতে ভাবতে- যেতে যেতে
যখোন আমি তোমার কাছে পোঁছে গেলাম
মনে হলো: ঝরাপাতা
কানে এলো: দুখবারতা
জমা হলো চোখের কোনে ঈষৎ শিশির জল
ফুল ফুটেছে হরেক রকম, সরুপ, সুবাস সবই কোমল,
কেবল বুকের কাছে বাগান মাঝে ভিন্ন কোন হাত
বুঝে গেলাম: জড়ো হলো-
প্রতিশ্রুতির আকাশ কোনে বড্ড বিষাদ রাত।।

গাজীপুর
মার্চ ১২, ১৯৯৭।



তোমার স্পর্শ পেলে


বিক্ষিপ্ত মনে জেগে উঠে তোমাকে পাবার আর্তি
সামান্য স্পর্শের অপেক্ষা, প্রসারিত প্রজ্জ্বলিত হৃদয়ে।

তোমার স্পর্শ পেলে, আমি মরে যাই।
যেন আমি দেবদূতের মতো ডানায় ডানায় ভেসে
উড়ে যাই কখন কল্পিত স্বর্গপথে।

তোমার স্পর্শ পেলে আঁধার আলোক হয়।
একটা তাজা গোলাপের মৃদু ঘ্রাণ এসে লাগে নাসিকা গ্রীবায়,
তারপর আমি পাগল হয়ে যাই।

তোমার স্পর্শ পেলে, হৃদয়ের কারফিউ ভেঙ্গে যায়।
রচিত হয় হৃদয়ের ক্যানভাসে একটি প্রমের কবিতা অনুপম
তোমার নীল ঠোঁটের ঐ বিকারবিহীন চাহনিতে।

তোমার স্পর্শ পেলে, অধিকার পেতে চাই।
স্মিতহাস্যে সমর্পিত তোমার উচ্ছ্বলতায় মত্ত হতে চাই
আলিঙ্গনে, তোমার মায়াবী প্রেমের শিকড়ে।

তোমার স্পর্শ পেলে, শুরু হয় হৃদয়ের রক্তক্ষরণ।
প্রাণহীন কামের খোলসে ফুজিয়ামার অগ্নুৎপাত হয়
নিশাচর ডেকে যায় রাতে-শয়নকক্ষে।

তোমার স্পর্শ পেলে আমার আকাঙ্খা ঘনীভূত হয়।
মধুবীর্য্যে অংকিত হয় অন্য পৃথিবীর ছবি অবরিত
তোমার প্রসারিত রুপোলী বুকের উত্তাপে।

তোমার স্পর্শ পেলে দ্রুত শরতের নীল মিশে যাই।
সুন্দর ওষ্ঠাধরে তোমার অবিরত চুমুতে, আমূলে উলঙ্গ হয়ে
একান্ত আবেগে আমি অসভ্য হয়ে যাই।

ন্যাশনাল পার্ক, গাজীপুর
২৮/০৪/১৯৯৫



ডায়লগ থেকে সংলাপ


বাস্তবতার শানানো ছোঁরার আঘাতে আমরা অবাস্তব স্তব্ধ হয়েছি।
আমাদের কেটেছ: বিষঁদাত, ছিঁড়েছে: ভ্রান্তির নির্মম করাত।

আমরা এখানে আত্মাকে ভয় পাই।
লোকে বলে: আবোধ পাগল।

আমরা এখানে মিছিলে যাইনা, তবু
ঘন ঘন টি.এস.সি তে যাই।

অথচ মিছেলে গিয়েছি বলে আমরা জন্মকে চি-নে-ছি।
মিছিলে গিয়েই আমরা মৃত্যুতে চি-নে-ছি।
স্লোগানে শিখেছি; ‘মৃত্যুর নামই বেঁ-চে-থা-কা’।
অথবা জন্মের অপর নাম মৃত্যু।

আমরা মিছিলে গিয়েই সম্ভবত মিছিল চিনেছি।
অখন্ড মিছিলকে খন্ড খন্ড দেখেছি‌।
রক্ত দেখেছি।
রক্তের নৃত্য দেখেছি।
লাশ হতে দেখেছি।
শিক্ষা পেয়েছি।
আমাদের শিক্ষা দোলে ইতিহাসের রোদ্দুরের ভেতর।
আমাদের শিক্ষা দোলে কালের বহমান স্রোতের আলোয়ার ভেতর।
আমরা এখন মিছিলে যাইনা।
পার্কে যাই।
ডেটিং করি।
চিঠি লিখি।
ভালোবাসা চাই।
ভালোবাসা চেয়ে চেয়ে পরিবর্তিত হয়েছি।
অসম্ভব মৃত হয়েছি।
অথবা দ্বিতীয় জন্ম পেয়েছি।

এভাবেই দ্বিতীয় জন্ম আমাদের মৃত্যুর দিকে টানে।
আমরন মৃত্যু।

অথচ আমাদের বেঁচে থাকা প্রয়োজন।
অথচ আমাদের মিছিলে যাওয়া প্রয়োজন।
অথচ আমাদের অশ্লীল সংলাপে আবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
অথচ আমাদের ইতিহাসের অংশ হওয়া বড়ো বেশি প্রয়োজন।।

ভাওয়াল বদরে আলম সরঃ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাস
জুন ১৫, ১৯৯৬।

Read more...

Tuesday, July 14, 2009

কবিতা বিষয়ক বিক্ষিপ্ত কিছু ভাবনা চিন্তা

০ কবিতা শব্দনির্ভর একটি পরম শিল্প। বক্তব্য ও বিষয় কিংবা চিন্তন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় উপকরণ সর্বাঙ্গে ধারন করেও কবিতা যে জিনিসটির অভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারেনা সেই বিশেষ জিনিসটি হলো- প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত শব্দ।

০ কবিকে সবসময় ভালো থাকতে হয় তার সৃষ্টির প্রয়োজনেই। সৃষ্টি'ই কবির আরাধ্য.. কর্ম'ই কবির ধ্যাণ.. আর সেই ধ্যাণজাত সৃষ্টি'ই সমাজের ক্ষতের মলম..;
মূলতঃ কবি একজন চিকিৎসক।

০ সব কবিতা-ই কবির নিজস্ব মত। যিনি কবি, তিনি অন্যের মতকে নিজের কলমে লেখেননা কখনো। তিনি অন্যসব মতকে আত্মস্থ করেন এবং নিজের বুদ্ধিদীপ্ত মতটি সুচারুরূপে প্রকাশ করেন। যাদের ভালো লাগে তারা সেই মতটিকে গ্রহন করেন।

Read more...

Monday, July 13, 2009

কবিতা' ২০০৮ : আনকোড়া কতিপয় খসড়া কবিতা

ইদানিং কবিতা

ইদানিং কবিতা মাঝরাতে চুলে বিলি কাটে
আমি অবসন্ন আরামে চোক বুজে থাকি, শূণ্যতা ভাসে ছন্দের পরতে-
ভাঁজ ভাঁজ সুরগুলো বহতা নদীর মতো কোন্ পানে বয়ে চলে যায়...

আমার বিছানা জুড়ে সহসা দেখি এলায়িত অনুপ্রাস
ঘুমঘুম চোখ মেলে চেয়ে আছে আমার দিকে, তালেরা উধাও-
বদলে ভৈরবী, উলঙ্গ মাতমে অনাবিল মূর্ছনা বাজায়...

অতঃপর বর্ণ সাজানো শ্রমে আর ঘামে
বর্ণ থেকে বাক্য- বাক্য জুড়ে কাব্যময় বাহারী উপমার মাদকতা-
কল্পের চিত্রগুলো মূহুর্তে প্রাণময় মুগ্ধ ইশারায়...

শ্রীপুর/ এপ্রিল ০৪, ২০০৮।।



ছিন্ন কবিতা

১.
রসগন্ধে মেতে আছি আজন্ম নেশাতুর আমি জলজ অবগাহনে
তৃষাতুর দুই গ্রীবা নিয়ত ফলবান দেখো তোমার আর্শীবাদে..

২.
এসো বিষন্নতা
আবারো সাজাই চিতা
আজন্ম দহনের।

৩.
মেঘপরী তোমার মেঘের কালোতে কাজল পড়েছি চোখে
বনলতাগুলো মুখ ভার করে আছে কালো কালো অভিমানে।

৪.
বর্ণচোরা মন
করে উচাটন
কাকে ফেলে কাকে রাখি,
রাতের নির্জনে
একাকী আনমনে
অতঃপর শূণ্যতাকে আঁকি।

শ্রীপুর/ এপ্রিল ০৫, ২০০৮।।



অর্পণ

ঘুমভাঙ্গা কাতর রাত্তিরে পিলপিল করে যাই প্রেয়সীর কাছে
কানে কানে মুখ রেখে বলি-
‘তুমি কি জলের তৃষ্ঞা মেটাতে পারো?’
‘পারি’।
‘অগ্নির দহন থামাতে পারো?’
‘পারি’।
‘কলকল বয়ে যাওয়া নদীকে ঘোরাতে পারো অন্য কোনো দিকে?’
‘পারি’।
‘করতে পারো শরীরের ভাঁজে ভাঁজে জমে থাকা বিষের বিণাশ?’
‘নিশ্চয় পারি’।

সুতরাং আমি আমাকে অর্পণ করি তার কাছে।
আমার ঠোঁটের তৃষ্ঞা
বুকের দহন
লিঙ্গের বহমান চোরা স্রোত
গতরের ভাঁজ ভাঁজ কামনার বিষ..
এইসব আদি অনাদি মৌল প্রাচীন অন্ধ বধির মূর্খ বোধগুলোকে
অনায়াসে তুলে দিই প্রেয়সীর আঁচলে;

অথচ আমার অশ্রু ও হতাশা- যাতনা ও ঊন্মাদনা- স্বপ্ন ও স্বপ্নহীনতা
এইসব; এইসব বলিষ্ঠ শব্দগুলোকে কোথায় গচ্ছিত রাখি?

শ্রীপুর/ মার্চ ২০, ২০০৮।।

Read more...
© Imon Reza একজন বোকাসোকা সাধারণ মানুষ, founder of nondon 2009

Back to TOP